মাগুরা জেলা
মাগুরা জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। বাংলাদেশের প্রথম নিরক্ষর মুক্ত জেলা ।
নামকরণের ইতিহাস :
বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে এক সমৃদ্ধ জনপদের নাম মাগুরা। ১৭৮৬ সালে বৃটিশ আমলে বাংলা প্রদেশের প্রথম গঠিত জেলা যশোর। কিন্তু একজন জেলা কর্মকর্তার পরে এ বৃহৎ জেলার আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণ ও প্রশাসনিক কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মুলত মগ জলদস্যুদের হাত থেকে এ জেলার উত্তরাঞ্চলের জন সাধারণকে রক্ষা করার জন্যই ১৮৪৫ সালে যশোর জেলার প্রথম মহকুমা করা হয় মাগুরাকে। মহকুমা গঠন করার পর প্রথম মহকুমা অফিসার হিসেবে আসেন মিঃ ককবার্গ। মহকুমা হবার আগে মাগুরা অঞ্চল ভূষণা ও মহম্মদপুর নামেই সুবিখ্যাত ছিল। পাল রাজত্বের সময় এ অঞ্চলের উত্তর ও উত্তর পূর্ব অংশ শ্রীপুর ও রাজাপুর নামে পরিচিত ছিলো। দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব অংশ ভূষনা। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হবার পর প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসাবে মাগুরাকে ১৯৮৪ সালে মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত করা হয়। প্রথম ডেপুটি কমিশনার নিয়োগ করা হয়নি অরবিন্দু করকে। মাগুরা জেলা মোট ৪টি থানা নিয়ে গঠিত। যথা মাগুরা সদর , শ্রীপুর , শালিখা, ও মহম্মদপুর যা ২টি সংসদীয় যথা মাগুরা-১ (জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকা) ও মাগুরা-২ (জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকা) নির্বাচনী এলাকায় বিভক্ত।
মাগুরার নামকরণ করা হয় মুঘল যুগে। এর নামকরণ কিভাবে হয়েছে তা স্থিরভাবে বলা দুস্কর। কিংবদন্তী থেকে জানা যায় এক কালে সুন্দরবনের কাছাকাছি এই অঞ্চলে মগ জল দস্যুদের দারুণ উৎপাত ছিল। কুমার নদী ও নবগঙ্গার তীরে অবস্থিত বর্তমান মাগুরা শহরে ছিল তাদের আখড়া। নদী পথে তারা বর্গীদের মতো দস্যুপনা করতো। তাদের নামেই মগরা থেকে মাগুরা হয়েছে। নেত্রকোণাতে ও দেখা যায় সেখানে মগরা নাকে একটি নদী ও রয়েছে। বাংলাদেশে মাগুরা নামে আরো বেশ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে, তবে জেলার মর্যাদায় উন্নীত হওয়ায় মাগুরা এখন শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার। তবে কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে মুঘল নবাব মুর্শিদকুলী খার আমলে মগদের অগ্রযাত্রাকে যেখানে প্রতিহত করে ঘুরিয়ে দেওয়া হত সেই স্থানটির নাম রাখা হত মগ-ঘুরা। মগ-ঘুরাই পরবর্তীতে মাগুরা হয়েছে। মাগুরা তথা যশোর- ফরিদপুর এলাকায় মগ- দস্যুদের অত্যাচার ও লুষ্ঠনের কাহিনী আজও ইতিহাসের এক বেদনাময় অধ্যায়। 'ছেলে ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে' প্রচলিত এই ছড়াটিও সে সময়ের প্রকৃত চিত্রই তুলে ধরেছে। মুহম্মদপুরের রাজা সীতারাম রায় ও যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্য মগ-বর্গী দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখেন। বলা চলে দস্যুদের এই দুই রাজাই প্রতিহত ও পরাজিত করেন। বহু মগ বর্গী সীতারামের কাছে আত্মসমর্পন করে এবং সেনাবাহিনী ও রাজ কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পান। আজকের মাগুরা শহরে তাদের নিবাসের ব্যবস্থাও করা হয়।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ :
মাগুরা জেলায় ৪টি উপজেলা রয়েছে। এগুলো হলো:
- মাগুরা সদর উপজেলা
- শ্রীপুর উপজেলা
- মহম্মদপুর উপজেলা
- শালিখা উপজেলা
মোট জনসংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষ ১৫ হাজার। এর মধ্যে
- পুরুষ: ৫০.৫৬%,
- মহিলা: ৪৯.৪৪%,
- মুসলমান:৭৭.৮৯%,
- হিন্দু: ২১.৮৯% এবং
- অন্যান্য: .২২%।
পূর্বে ফরিদপুর, পশ্চিমে ঝিনাইদহ, উত্তরে রাজবাড়ী ও দক্ষিণে যশোর ও নড়াইল।
চিত্তাকর্ষক স্থান :
- মনপুরা দ্বীপ
- শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র
- চর কুকরিমুকরি
- শিশু পার্ক
- উপমহাদেশের সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার, চরফ্যাশন
নদ-নদী :
গড়াই নদী , মধুমতি নদী , কুমার নদী , চিত্রা নদী , নবগঙ্গা নদী , ফটকি নদী , ভৈরব নদী, সিরাজপুর হাওর নদী, বেগবতী নদী, এবং মুচিখালি নদী জেলার প্রধান নদ নদী ।
- প্রফেসর ডাক্তার সিরাজুল আকবর এমপি
- সৈয়দ আতর আলি এমপি
- এ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন
- এ্যডভোকেট আসাদুজ্জামান এমপি
- শ্রী বিরেন শিকদার এমপি, যুব ও ক্রিড়া প্রতিমন্ত্রী
- মেজর জেনারেল (অবঃ) এম মজিদুল-উল-হক এমপি
- নিতাই রায় চৌধুরী এমপি
- মেজর জেনারেল (অবঃ) এটি এম আব্দুল ওহাব এমপি
- কাজী সালিমুল হক কামাল এমপি
- সাহিত্যিক লুত্ফর রহমান
- সাহিত্যক নিমাই ভট্টাচার্য
- কবি কাজী কাদের নেওয়াজ
- কবি ফররুখ আহমদ
- কবি মোহাম্মদ গোলাম হোসেন
- কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচী
- সাহিত্যরত্ন সৈয়দা সুফিয়া খাতুন
- সাহিত্যরত্ন শেখ হাবিবুর রহমান
- শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন
- কবি বিএমএ হালিম
- কবি সাগর জামান
- বনানী চৌধুরী
- দিদার ইসলাম
- লেখক মাওলানা আবুল খায়ের (পাটখালী)
- ছড়াকার আবু সালেহ
- মিয়া আকবর হোসেন
- সৈয়দ আলী আহসান
- ফুটবলার খবির আহম্মেদ
- ফুটবলার সৈয়দ নাজমুল হাসান লোভন
- ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান
- এ্যাড. সাইফুইজামান শেখর
0 Comments