ফরিদপুর জেলা
ফরিদপুর জেলা : ফরিদপুর জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।
নামকরণের ইতিহাস :
ফরিদপুর জেলার প্রতিষ্ঠা ১৭৮৬ সালে। মতান্তরে এ জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮১৫ সালে। ফরিদপুরের নামকরণ করা হয়েছে এখানকার প্রখ্যাত সুফি সাধক শাহ শেখ ফরিদুদ্দিনের নামানুসারে। এ জেলার পূর্বনাম ছিল ‘‘ফতেহাবাদ’’। ফরিদপুর জেলার প্রতিষ্ঠা সন ১৭৮৬ হলেও তখন এটির নাম ছিল জালালপুর এবং প্রধান কার্যালয় ছিল ঢাকা। ১৮০৭ খ্রিঃ ঢাকা জালালপুর হতে বিভক্ত হয়ে এটি ফরিদপুর জেলা নামে অভিহিত হয় এবং হেড কোয়ার্টার স্থাপন করা হয় ফরিদপুর শহরে। গোয়ালন্দ, ফরিদপুর সদর, মাদারিপুর ও গোপালগঞ্জ এই চারটি মহকুমা সমন্বয়ে ফরিদপুর জেলা পূর্ণাঙ্গতা পায়। বর্তমানে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা ফরিদপুর, রাজবাড়ি, গোপালগঞ্জ, মাদারিপুর ও শরিয়তপুর এই পাঁচটি জেলায় রূপান্তরিত হয়েছে।
এই এলাকার প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে রয়েছে গারোদা মসজিদ (১০১৩ হিজরি), পাথরাইল মসজিদ ও দিঘী (১৪৯৩-১৫১৯ খ্রিস্টাব্দ), সাতৈর মসজিদ (১৫১৯ খ্রিস্টাব্দ)। এলাকার অন্য উল্লেখযোগ্য স্থাপনা হলো ফতেহাবাদ টাঁকশাল (১৫১৯-৩২ খ্রিস্টাব্দ), মথুরাপুরের দেয়াল, জেলা জজ কোর্ট ভবন (১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দ), এবং ভাঙ্গা মুন্সেফ কোর্ট ভবন (১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দ), বসুদেব মন্দির ও জগবন্ধু আঙিনা।
ততৎকালিন ফরিদপুর এর মাদারিপুর থেকে হাজি শরীয়তুল্লাহ ফরায়েজী আন্দোলন শুরু করেন। শরীয়তুল্লাহের পুত্র দুদু মিয়ার নেতৃত্বে এখানে নীল কর বিরোধী আন্দোলন হয়। জেলার প্রধান নীল কুঠিটি ছিলো আলফাডাঙা উপজেলার মীরগঞ্জে, যার ম্যানেজার ছিলেন এসি ডানলপ। এ জেলার ৫২টি নীল কুঠি এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। গড়াই, মধুমতি ও বরশিয়া নদীর তীরে নীল চাষ হতো।
জেলা শহর বর্তমানে কুমার নদীর তীরে অবস্থিত। ফরিদপুর পৌরসভা সৃষ্টি হয় ১৮৬৯ সালে। ৯টি ওয়ার্ড ৩৫টি মহল্লা নিয়ে জেলা শহর গঠিত। এর আয়াতন ২০.২৩ বর্গ কিলোমিটার।
ভৌগোলিক সীমানা :
আয়তন ২০৭২.৭২ বর্গ কিলোমিটার, ফরিদপুর জেলা ৮৯.২৯০পূর্ব হতে ৯০.১১০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ এবং ২৩.১৭০উত্তর হতে ২৩.৪০০উত্তর অক্ষাংশে অবস্থিত, উত্তরে রাজবাড়ি জেলা ও মানিকগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে গোপালগঞ্জ জেলা, পশ্চিমে মাগুরা জেলা ও নড়াইল জেলা এবং পূর্বে মাদারিপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলা অবস্থিত।
ঐতিহাসিক স্থানসমূহঃ
ফরিদপুর জেলার চিত্তাকর্ষক স্থানগুলার মদ্ধে উল্ল্যেখযোগ্য হচ্ছে,
পদ্বার চরে সূযাস্ত |
- নদী গবেষণা ইন্সটিটিউট
- সুইচ গেট
- ধলার মোড় (পদ্মার পাড়)
- রাজেন্দ্র কলেজ (সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ)
- পদ্মা বাধ
- পল্লী কবি জসীম উদ্দীন এর বাসভবন।
- পদ্মা নদীর বালুচর,সি এন্ড বি ঘাট
- শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গন (hindu temple)
- নন্দালয় (hindu temple)
- শেখ রাসেল শিশু পার্ক (amusement park)
প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব :
- হাজী শরীয়তুল্লাহ - ফরায়েজী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা;
- অম্বিকাচরন মজুমদার - সাবেক সভাপতি, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (১৯২৬-১৯২৮);
- আবদুল খালেক - ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবী, অবিভক্ত ভারতের কংগ্রেস নেতা, পরবর্তীতে নেতাজী সুভাষ বসুর ফরওয়ার্ড ব্লক এবং বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স-এর কেন্দ্রীয় নেতা;
- মুন্সি আব্দুর রউফ - বীরশ্রেষ্ঠ;
- আলাওল - মধ্যযুগের কবি;
- কাজী মোতাহার হোসেন - শিক্ষাবিদ, পরিসংখ্যানবিন, সাহিত্যিক;
- জসীম উদ্দিন - পল্লীকবি;
- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় - ঔপন্যাসিক, কবি;
- নরেন্দ্রনাথ মিত্র - ঔপন্যাসিক;
- মীর মশাররফ হোসেন - ঔপন্যাসিক;
- হাবিবুল বাশার - ক্রিকেটার;
- হুমায়ুন কবির - শিক্ষাবিদ;
- মৃণাল সেন - ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও লেখক;
- রশিদ চৌধুরী- চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, লেখক,অধ্যাপক;
- অমল বোস - অভিনেতা;
- রোজিনা - চলচ্চিত্র অভিনেত্রী;
- অঞ্জু ঘোষ - চলচ্চিত্র অভিনেত্রী;
- ফজলুর রহমান বাবু - অভিনেতা, গায়ক;
- তারেক মাসুদ - চলচ্চিত্রকার;
- শাহ আবু জাফর - বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ;
- ড. এটিএম শামসুল হুদা - সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার;
- সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী - সংসদ সদস্য, সংসদ উপনেতা, সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী;
- গীতা দত্ত - সংগীত শিল্পী;
- মিনার মাহমুদ -সাংবাদিক;
- ড.উপল তালুকদার - লেখক,কবি,অধ্যাপক।
0 Comments