সিরাজগঞ্জ জেলা

Sirajganj District of rajshahi Division in Bangladesh সিরাজগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। তাঁতশিল্প এ জেলাকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করেছে। বঙ্গবন্ধু সেতু (যমুনা সেতু) এবং সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধের অপূর্ব সৌন্দর্য এ জেলাকে পর্যটনসমৃদ্ধ জেলার খ্যাতি এনে দিয়েছে। তা ছাড়া শাহজাদপুর উপজেলার রবীন্দ্র কাঁচারিবাড়ি, এনায়েতপূর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল, মিল্কভিটা, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তের ইকোপার্ক, বাঘাবাড়ি বার্জ মাউনন্টেড বিদ্যুত্ উত্পাদন কেন্দ্র, বাঘাবাড়ি নদী বন্দর ইত্যাদি বিখ্যাত স্থাপত্য ও শৈল্পকর্মের নিদর্শন এ জেলাকে সমৃদ্ধতর করেছে।

নামকরণের ইতিহাস :

বেলকুচি থানায় সিরাজউদ্দিন চৌধুরী নামক এক ভূস্বামী (জমিদার) ছিলেন। তিনি তাঁর নিজ মহালে একটি গঞ্জ’ স্থাপন করেন। তাঁর নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় সিরাজগঞ্জ। কিন্তু এটা ততটা প্রসিদ্ধি লাভ করেনি। যমুনা নদীর ভাঙ্গনের ফলে ক্রমে তা নদীগর্ভে বিলীন হয় এবং ক্রমশঃ উত্তর দিকে সরে আসে। সে সময় সিরাজউদ্দীন চৌধুরী ১৮০৯ সালের দিকে খয়রাতি মহল রূপে জমিদারী সেরেস্তায় লিখিত ভুতের দিয়ার মৌজা নিলামে খরিদ করেন। তিনি এই স্থানটিকে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রধান স্থানরূপে বিশেষ সহায়ক মনে করেন। এমন সময় তাঁর নামে নামকরণকৃত সিরাজগঞ্জ স্থানটি পুনঃ নদীভাঙ্গণে বিলীণ হয়। তিনি ভুতের দিয়ার মৌজাকেই নতুনভাবে ‘সিরাজগঞ্জ’ নামে নামকরণ করেন। ফলে ভুতের দিয়ার মৌজাই ‘সিরাজগঞ্জ’ নামে স্থায়ী রূপ লাভ করে।

ভৌগোলিক সীমানা :

রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক পথে এর দূরত্ব ১৪২ কিমি। এর ভৌগোলিক অবস্থান ২৪'২২ ও ২৪'৩৭ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯'৩৬ ও ৮৯'৪৭ দ্রাঘিমা এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের অবস্থান। এ জেলার দক্ষিণে পাবনা, উত্তরে বগুড়া, পূর্বে টাঙ্গাইল ও জামালপুর , পশ্চিমে পাবনা, নাটোর ও বগুড়া জেলা অবস্থিত। এ জেলার আয়তন ২৪৯৭.৯২ ব: কি.মি.।

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ :

পাকিস্তান আমলের মহুকুমা সিরাজগঞ্জকে জেলায় উন্নীত করা হ্য় ১লা এপ্রিল, ১৯৮৪ সালে। সিরাজগঞ্জের জেলা ৯টি উপজেলায় বিভক্ত। এ গুলো হল
  • বেলকুচি
  • কামারখন্দ
  • চৌহালি
  • কাজীপুর
  • রায়গঞ্জ
  • শাহজাদপুর
  • সিরাজগঞ্জ সদর
  • তাড়াস
  • উল্লাপাড়া

সিরাজগঞ্জ শহর :

সিরাজগঞ্জ শহর মধ্য বাংলাদেশে অবস্থিত একটি শহর। এটি যমুনা নদীর পশ্চিম তীরে এবং ঢাকা শহর হতে প্রায় ১১০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত। শহরটি সিরাজগঞ্জ জেলার প্রধান শহর। এখানে ১৫টি ওয়ার্ড এবং ৫২টি মহল্লা রয়েছে। ২০০১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী এর জনসংখ্যা ১২,৭১৪। বর্তমানে এটি পাট ব্যবসার একটি প্রধান কেন্দ্র। এখানকার পাটকলগুলো তদানীন্তন বাংলা প্রদেশের প্রথম দিককার পাটকলের মধ্যে পড়ে।

ঐতিহাসিক স্থানসমূহঃ


সিরাজগঞ্জ জেলার চিত্তাকর্ষক স্থানসমূহ হচ্ছে— যমুনা সেতুর দুই পাড়, সায়েদাবাদ; রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুটিবাড়ী, শাহজাদপুর; এনায়েতপুরী পীর সাহেবের মাজার এবং মসজিদ, চৌহালি; শিব মন্দির, তারাশ; নবরত্ন মন্দির, উল্লাপাড়া; ইলিওট ব্রিজ যা লোহার ব্রিজ বা বড় পুল নামে পরিচিত, সিরাজগঞ্জ সদর ; সিরাজগঞ্জ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, সিরাজগঞ্জ সদর; কওমি জুটমিল গদক্যফদল্গ,ইসলামিয়া সরকারি কলেজ

প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব :

  • মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
  • সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী
  • মাওলানা খোন্দকার আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ
  • সাবেক মন্ত্রী (জাতীয় চার নেতার একজন) মনসুর আলী
  • মোহাম্মদ নাসিম
  • মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান
  • ড: আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিন
  • কবি মহাদেব সাহা
  • ফজলে লোহানী
  • সুচিত্রা সেন
  • সমা সরকার সমাজ সেবক
  • যাদব চন্দ্র চক্রবর্তী (১৮৫৫-১৯২০)
  • মকবুলা মঞ্জুর
  • মোহাম্মদ নজিবর রহমান, সাহিত্যরত্ন
  • রজনী কান্ত সেন
  • ফতেহ লোহানী
  • বাপ্পী লাহিড়ী
  • হৈমন্তী শুক্লা
  • আবদুল মতিন
  • মুসা ইব্রাহীম (জন্ম: ১৯৭৯) একজন
  • বাংলাদেশী পর্বতারোহী এবং সাংবাদিক, যিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন।
  • আফিয়া নুসরাত বর্ষা ({{জন্ম ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৯ "বর্ষা" পরিচিত নামে) একজন বাংলাদেশী অভিনেত্রী।