ঠাকুরগাঁ জেলা
নামকরণের ইতিহাস :
টাংগন, শুক ও সেনুয়া বিধৌত এই জনপদের একটি ঠাকুর পরিবারের উদ্যোগে বৃটিশ শাসনমলে বর্তমান পৌরসভা এলাকার কাছাকাছি কোনো স্হানে একটি থানা স্হাপিত হয়। এই পরিবারের নাম অনুসারে থানাটির নাম হয় ঠাকুরগাঁও থানা। "ঠাকুর" অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের সংখ্যাধিক্যের কারণে স্হানটির নাম ঠাকুরগাঁও হয়েছে। ১৭৯৩ সালে ঠাকুরগ্রাম অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।[৩] ১৮৬০ সালে এটি মহকুমা হিসেবে ঘোষিত হয়। এর অধীনে ছয়টি থানা ছিল, এগুলো হলঃ ঠাকুরগাঁও সদর, বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল, হরিপুর ও আটোয়ারী। ১৯৪৭ সালে এই ৬টি থানা এবং ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার ৩টি থানা ও কোচবিহারের ১টি থানা (পঞ্চগড়, বোদা, তেতুলিয়া ও দেবীগঞ্জ) নিয়ে ১০টি থানার মহকুমা হিসেবে ঠাকুরগাঁও নুতনভাবে যাত্রা শুরু করে। কিন্ত ১৯৮১ সালে আটোয়ারী, পঞ্চগড়, বোদা, দেবীগঞ্জ ও তেতুলিয়া নিয়ে পঞ্চগড় নামে আলাদা মহকুমা সৃষ্টি হলে ঠাকুরগাঁও মহকুমার ভৌগোলিক সীমানা ৫টি থানায় সংকুচিত হয়ে যায়। থানাগুলি হচ্ছেঃ ঠাকুরগাঁও সদর, পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গী ও হরিপুর। ১৯৮৪ সালের ১লা ফেব্রুয়ারী ঠাকুরগাঁও মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়। ছোট জেলা হলেও ঠাকুরগাঁও প্রাচীন ঐতিহ্যসমৃদ্ধ একটি জনপদ। এখানে যেমন উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর (সাঁওতাল ও উরাও) মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, তেমনিভাবে বৌদ্ধ, হিন্দু, মুসলমান শাসনামলে বিভিন্নমুখি পরিবর্তনের ছোয়ায় পালাবদলের প্রক্রিয়া চলেছে। জেলার নেকমরদ, রাণীশংকৈল এসব স্হানে সুপ্রাচীন সভ্যতার নির্দশন বিদ্যমান। অতীত এবং বর্তমান বিচারে উত্তরাঞ্চলের মধ্যে ঠাকুরগাঁও একটি সমৃদ্ধ জেলা। ১৯৭১-এ স্বাধীনতা লাভের পর থেকে বরেন্দ্র ভূমির অন্যান্য জেলার মতই এই জেলার মানুষ ক্রমান্বয়ে উন্নততর যোগাযোগ ব্যবস্যা এবং উন্নয়নের অন্যান্য সুফল লাভে সক্ষম হচ্ছে। ঠাকুরগাঁও জেলার মানুষ বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার সভ্যতা ও সংস্কৃতির সাথে যোগসূত্র স্হাপন করে সকল সামাজিক, রাজনৈতিক আন্দোলনে ভাগীদার হয়েছে এবং নেতৃত্বের স্বাক্ষর রেখেছে।
ভৌগোলিক সীমানা :
ঠাকুরগাঁও জেলার উত্তরে পঞ্চগড় জেলা, দক্ষিণে দিনাজপুর জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পূর্বে দিনাজপুর জেলা এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অবস্থিত।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ :
ঠাকুরগাঁও জেলা ছয়টি উপজেলায় বিভক্ত। এগুলো হচ্ছে:
- ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা
- পীরগঞ্জ উপজেলা
- বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা
- রানীশংকৈল উপজেলা
- হরিপুর উপজেলা
- রুহিয়া উপজেলা
কুটির শিল্প:
সুজাবাদ কেল্লা, ঘোষাল রাজবাড়ী, পুরাতন পৌরসভা ভবন, মাদাবর মসজিদ, সুরিচোরা জামে মসজিদ। নেছারাবাদ মাদ্রাসা্, গাবখান সেতু
নদ-নদী :
বিশখালি, সুগন্ধা, ধানসিড়ি, গাবখান, জাংগালিয়া ও বাসন্ডা। ইত্যাদি।
0 Comments